বাঁশখালীতে কালজয়ী মালেকা বানু মসজিদ ও দিঘি : ডা. জসিম তালুকদার
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলা সরল ইউনিয়নের মালেকা বানু-মনু মিয়ার প্রেম উপাখ্যান এরই মধ্যে লোকগাঁথা, যাত্রাপালা, মঞ্চনাটক ও পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে । তাঁদের প্রেম কাহিনী নিয়ে করার এসব যাত্রাপালা, নাটক, সিনেমা দেশের সর্বত্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল । তাদের এই প্রেম উপাখ্যান অনেকের কাছে কল্পিত কাহিনী বা রূপকথা মনে হলেও বাস্তবে কিন্তু তা নয় । মালেকা বানু-মনু মিয়ার প্রেম উপখ্যান ছিল বাস্তবভিত্তিক প্রেম কাহিনী । ইতিহাস খ্যাত মালেকা বান-মনু মিয়ার প্রেম উপাখ্যানের অন্যতম কালজয়ী সাক্ষী বাঁশখালীর সরল ইউপিতে অবস্থিত মালেকা বানুর মসজিদ ও দিঘি । মালেকা বানুর বাবার নাম আমির মোহাম্মদ চৌধুরী । বাঁশখালীর সরল ইউনিয়নের গ্রামে ছিল তাদের বসতি এবং জমিদার এস্টেট । সরল গ্রামে মালেকা বানুর নামে রয়েছে একটি প্রাচীনতম মসজিদ ও বিলুপ্ত প্রায় একটি দিঘি । চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা উপজেলার জমিদারপুত্র মনু মিয়ার সঙ্গে মালেকা বানুর বিয়ে ইতিহাসের এক চমকপ্রদ ঘটনা।
আমীর মোহাম্মদ চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি চট্টগ্রাম বাঁশখালী উপজেলা ৭নং ইউনিয়নে সরলে বসবাস করতেন এবং তিনি ছিলেন প্রভাবশালী জমিদার। তাঁর ছিল এক মেয়ে ও সাত ছেলে । তাঁর একমাত্র মেয়েটিই ইতিহাস খ্যাত মালেকা বানু চৌধুরী । মালেকা বানু বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন আনোয়ারার উপজেলার জমিদারপুত্র মনু মিয়ার সঙ্গে । সংসারে এক মেয়ে সন্তানের জন্মের পর মালেকা বানু স্বামীর সঙ্গে অভিমান করে পিতৃবাড়ি বাঁশখালীর সরলে চলে আসেন। বাঁশখালী উপজেলা ৭নং ইউনিয়নের সরল বাজারের পশ্চিম পার্শে বর্তমানে যে মসজিদ এবং দিঘি স্মৃতি হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে তা মালেকা বানুর বাবা আমির মোহাম্মদ নির্মাণ করেন । তাতে ফার্সি ভাষায় একটি শিলালিপি ছিল । পরবর্তীতে ঘূর্ণিঝড়সহ বিভিন্ন দূর্যোগে তা বিলীন হয়ে যায় । শত শত বছরের প্রাচীন ইতিহাসের স্মৃতিবহ এই মসজিদটির প্রকৃত তথ্য জানা সম্ভব হয়নি ।
[ লেখক–জসিম তালুকদার চিকিৎসক, জেলা সংবাদ প্রতিনিধি দৈনিক প্রত্যয় ও মানবাধিকার সংগঠক]